চাকরির বাজার, পছন্দের শীর্ষে ব্যাংক


সামাজিক মর্যাদা, আর্থিক সচ্ছলতা এবং দ্রুত ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ থাকায় ব্যাংকের চাকরির প্রতি তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ বেশ। ব্যাংক খাতে কাজের ভালো পরিবেশ ভালো, সম্মানজনক, বেতন কাঠামো ইর্ষণীয়।
বছরে বেশ কয়েকটি ইনসেনটিভ পাওয়া যায়, যা অন্য বহু প্রতিষ্ঠানে নেই। ব্যাংকারদের সামাজিক মর্যাদার পাশাপাশি রয়েছে চাকরি নিরাপত্তা এবং পেনশনের ব্যবস্থা। নিয়মমাফিক ইনক্রিমেন্ট, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচ্যুইটি। রয়েছে হাউস লোন, কার লোনসহ নানা সুবিধা। মোট কথা, কেউ ব্যাংকে চাকরি পেলে তার অর্থনেতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত। এসব কারণেই মূলত তরুণদের ব্যাংকের চাকরি বেশি টানছে।
সরকারি ব্যাংকে নিয়োগ হয়ে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে। কমিটি ব্যাংকগুলোর চাহিদার ভিত্তিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে নিয়োগ করে। সরকারি ব্যাংকে চাকরির জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে প্রার্থীদের আবেদন করতে হবে। স্নাতক পাস যে কোনো ব্যক্তিই পরীক্ষা দিতে পারে।
তবে পরীক্ষায় ভালো করে অর্থনীতি, ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, এমবি করা শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ব্যাংকগুলো বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং শুরু করেছে ব্যাপকভাবে। এজন্য এজেন্ট নিয়োগ করা হয়। এ খাতেও কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। গত বছর রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংকের বিভিন্ন (সিনিয়র অফিসার, অফিসার ও অফিসার (ক্যাশ) ইত্যাদি) পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর আবেদন জমা পড়ে ২০ লাখের ওপরে। এর মধ্যে চাকরি পেয়েছে প্রায় ১২ হাজার প্রার্থী। নতুন করে আরও পাঁচটি সরকারি ব্যাংকের ১ হাজার ৬০০ পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থীও আবেদন জমা পড়েছে ২ লাখ ৭২ হাজার। এ পরীক্ষা এখনও হয়নি। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর লাখ লাখ সিভি জমা পড়েছে। এ তথ্যই বলে দিচ্ছে, চাকরির ক্ষেত্রে তরুণদের পছন্দের তালিকায় ব্যাংক শীর্ষে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আরিফ হোসেন খান যুগান্তরকে বলেন, তরুণদের চাকরির পছন্দের শীর্ষে ব্যাংকিং খাত। গত বছর শুধু বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকেই প্রায় ১২ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি মিলিয়ে ৫৯টি ব্যাংক আছে। যোগ হচ্ছে আরও তিনটি নতুন ব্যাংক। আর এসব ব্যাংকের দেশব্যাপী শাখার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এছাড়া নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে ৩৪টি। এ বিশাল কর্মযজ্ঞে দেশের উল্লেখযোগ্য মানুষ কাজ করছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের জনবল প্রায় ৭০ হাজার।
এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকেরই রয়েছে ২৪ হাজার জনবল। বাকিগুলো অন্য পাঁচ ব্যাংকের। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে অনেকে কাজ করছেন। দিন দিন ব্যাংকগুলোর শাখা ও কার্যক্রম বাড়ছে। নতুন করে বুথ ব্যাংকিং চালু করছে অনেক ব্যাংক। আর এজন্য প্রয়োজন হচ্ছে বাড়তি জনবল। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর এক হিসাব বলছে, এসব ব্যাংকে প্রতিবছর ২০ হাজারের বেশি নতুন লোক নিয়োগ হয়।
Leave a Reply